দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন বাজালিয়া তহশীল অফিসের ভারপ্রাপ্ত ভূমি কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হক। ১৬ জানুয়ারী মঙ্গলবার বিকালে সাতকানিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার কার্যালয় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, বাজালিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা চট্টগ্রাম সরকারী হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বিজিসি ট্রাষ্ট ইউনিভার্সিটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর নুরুল হুদা সিকদার তার পৈত্রিক সম্পত্তির ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করার জন্য গত ২৫ সেপ্টেম্বর গিয়েছিলেন বাজালিয়া ইউনিয়ন তহশীল অফিসে। সেখানে তহশীল অফিসের (ভারপ্রাপ্ত) ভূমি কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হকের কাছে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তির বড়দোয়ারা মৌজার প্রায় ৮০০ শতক জমির খাজনা কত টাকা আসবে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে আড়াই লাখ টাকা দাবি করেন। এত টাকা দাবি করায় তিনি হতবম্ব হয়ে পরে ভূমি কর্মকর্তাকে আরো কমিয়ে খাজনার টাকা হিসাব করার অনুরোধ করেন নুরুল হুদা সিকদার। তার অনুরোধে প্রেক্ষিতে ভূমি কর্মকর্তা এনাম হিসাব করে ৬৫ হাজার টাকা খাজনার কথা বলেন। ভূমি কর্মকর্তার দাবী অনুযায়ী নুরুল হুদা ২৫ সেপ্টেম্বর সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে তিনি (নুরুল হুদা) ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের রশিদ সংগ্রহ করতে গেলে তহশীলদার এনাম ১৩টি রশিদমূলে ৩২ হাজার ১৭ টাকা খাজনার হিসাব প্রদান করেন। এ সময় নুরুল হুদা বাকী টাকার হিসাব চাইলে ভূমি কর্মকর্তা বিভিন্ন অজুহাত দেখান এবং তার সামনে অন্যজনকে মোবাইলে এ রকম একটা অংক উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দিতে হয় বলে জানান। বিষয়টির কোন সদোত্তর ভূমি কর্মকর্তার কাছে না পেয়ে নুরুল হুদা সিকদার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে একই বিষয়ে নুরুল হুদার সিকদার গত ১০ ডিসেম্বর সাতকানিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট পুনরায় অভিযোগ দায়ের করেন। নুরুল হুদার সিকদারের অভিযোগ পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) গতকাল মঙ্গলবার উভয় পক্ষকে ডেকে শুনানী করেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ে শুনানীর এক পর্যায়ে অবস্থা বেগতিক দেখে তহশীলদার এনামুল হক কক্ষের বাহিরে এসে নুরুল হুদা সিকদারের সাথে থাকা ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম মীরের কাছে ৬৫ হাজার টাকা বাবদ বাকী ৩২ হাজার ৯শত’ ৮৩ টাকা ফেরত দেন। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম মীর।

প্রফেসর মো. নুরুল হুদা সিকদার বলেন, আমি ভূমি অফিসে খাজনা দিতে গেলে তহশীলদার প্রথমে আড়াই লক্ষ টাকা দাবি করে। পরে পঁয়ষট্টি হাজার দাবী করে। আমি পঁয়ষট্টি হাজার টাকা পরিশোধ করি। কিন্তু রশিদ দেয়ার সময় অর্ধেক টাকার রশিদ প্রদান করেন।

বাজালিয়া ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত তহশীলদার এনামুল হক বলেন, আমি (ভূমি উন্নয়ন করের নামে) ওনার কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করিনি । যে টাকা নিয়েছি, তা রশিদ দিয়েছি। ওনি আমার প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সাতকানিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপঙ্কর তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, বাজালিয়া তহশীল অফিসের ভারপ্রাপ্ত ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। আজ ১৬ জানুয়ারী মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষকে ডেকে শুনানী করে উভয় পক্ষ থেকে বক্তব্য নেয়া হয়েছে।